পাউলোনিয়া পরিবেশবান্ধব, দ্রুত ও উচ্চ বর্ধনশীল একটি গাছ। এটি অধিক ফলনশীল এবং সুঠাম কাণ্ডের অধিকারী হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে খুবই লাভজনক।
প্রথম ২-৪ বছর পর এর তেমন কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না।
৭-৮ বছরে গাছটি প্রায় ৬০-৬৫ ফুট (১৮-২০ মিটার) লম্বা হয়।
৭-৮ বছরের ১টি গাছ থেকে প্রায় ১৫০-২০০ বোর্ড ফিট (১২-১৬ ঘনফুট/০.৩-০.৫ ঘনমিটার) কাঠ পাওয়া যায়। [১ বোর্ড ফিট: ১২ ইঞ্চি x ১২ ইঞ্চি x ১ ইঞ্চি]
পরিণত গাছ কেটে ফেলার পর কর্তিত গোড়া থেকে নতুন গাছের জন্ম হয় (Regeneration of a tree). এই গাছ একবার রোপণ করলেই আটবার পর্যন্ত ফলন তোলা যায়, ফলে নতুন চারার জন্য পরবর্তিতে কোন প্রকার বিনিয়োগের প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমেই বারংবার ফলন তোলা যায়।
এই গাছের সাথে বিভিন্ন ধরনের সাথী ফসল চাষ করা যায় বিধায় এই গাছের বাগান অত্যন্ত লাভজনক।
গাছের উন্নত শিকড় প্রায় ২৫-৩০ ফিট (৮-৯ মিটার) গভীরে গিয়ে মাটির ক্ষয়রোধ করে, যা প্রাকৃতিক পাইলিংয়ের মতো।
এই কাঠ অত্যন্ত মসৃণ, নমনীয় কিন্ত শক্ত এবং উচ্চ চাপ ও তাপ (৪৭০°সে.) সহনশীল।
কাঠের রঙ সাদা বা হাল্কা হলুদ তাই সুন্দর ফার্নিচার তৈরী করা যায়। এই কাঠ সহজে ফাটে না, ভাঙে না ও পচে না।
ট্যানিন নামক পদার্থ থাকায় কাঠে কখনোই ঘুনপোকা আক্রমণ করতে পারে না।
প্রচলিত সেগুন, পাইন বা ওক গাছের চেয়েও এই কাঠ উন্নত ও দামি।
কাঠের ওজন ২০৮-২৮২ কেজি/ঘনমিটার, যা ওক কাঠের একচতুর্থাংশ অংশ আর পাইন কাঠের অর্ধেক এর সমান। অর্থাৎ এই কাঠ অন্যান্য কাঠের তুলনায় হাল্কা অথচ মজবুত হওয়ায় এর বহুল ব্যবহারের অনেক সুবিধা রয়েছে।
এই গাছ ৫-৮ পিএইচ যুক্ত মাটিতে ভালো জন্মে ও এই কাঠের আপেক্ষিক গুরুত্ব ০.২৬৫।
পরিণত প্রতিটি গাছ দৈনিক ৬ কেজি অক্সিজেন সরবরাহ ও ২২ কেজি কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে।
শীতকালে গাছের পাতা ঝরে যায় এবং ৬-৮ সপ্তাহ স্থায়ী ফুল ফুটতে দেখা যায়।
এর পাতায় পুষ্টি উপাদান থাকায় পাতা আদর্শ গো-খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
বাণিজ্যিক বাগান থেকে বিপুল পরিমাণে উন্নতমানের দুর্লভ মধু, ওয়াইন ও অন্যান্য পণ্য উৎপাদন করা যায়।
এই গাছ থেকে ঔষধ ও প্রসাধন শিল্পের নানাবিধ কাঁচামাল পাওয়া যায়।
এই গাছের পাতা বড় ও লোমশ হওয়ায় দূষিত বায়ু মন্ডলের ধোঁয়া ও ধুলা পরিশোধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।